কলেজে আসতে ১৫ মিনিট দেরি: অধ্যক্ষের হাতে রক্তাক্ত সহকারী অধ্যাপক

১৫ মিনিট দেরিতে কলেজে আসায় পাবনার ঈশ্বরদীর সলিমপুর ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও সিনিয়র শিক্ষক রহমত উল্লাহ মন্ডলকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ রবিউল আলম সাবানের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অধ্যক্ষের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানান, কলেজের নিয়ম অনুযায়ী সকল শিক্ষককে সকাল ১০টার মধ্যে কলেজে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে হবে। কিন্তু সহকারী অধ্যাপক রহমত উল্লাহ মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে অধ্যক্ষের কক্ষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে যান। দেরি করার কারণে রহমত উল্লাহকে খাতায় অনুপস্থিত করে দেন অধ্যক্ষ।

এসময় রহমত উল্লাহ অধ্যক্ষের উদ্দেশে বলেন, ‘বাড়িতে সমস্যা ছিল। সড়কে যানজটও ছিল। এ জন্য ১৫ মিনিট দেরি হয়েছে। আমার নৈমিত্তিক ছুটি পাওনা আছে। আমি ছুটির দরখাস্ত দিতে চাই। না হলে আজকের জন্য খাতায় স্বাক্ষর করতে দেন।’

এ কথা শুনে অধ্যক্ষ রবিউল আলম ক্ষিপ্ত হয়ে রহমত উল্লাহকে অকথ্য ভাষায় তাকে গালিগালাজ করতে থাকেন। রহমত উল্লাহ গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে অধ্যক্ষ আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। উত্তেজিত হয়ে রহমত উল্লাহকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন তিনি। এতে ওই শিক্ষক মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গেলে তাকে লাথিও মারেন অধ্যক্ষ। এক পর্যায়ে পাশের কক্ষ থেকে তিনজন শিক্ষক ছুটে এসে রহমত উল্লাহকে উদ্ধার করেন।

ফলো করুন-
ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন সমকাল ইউটিউব
এ বিষয়ে রহমত উল্লাহ বলেন, অধ্যক্ষ প্রায়ই শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর আগে গত ১২ জুন এবং ২০১৭ সালেও আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিলেন। দেরিতে কলেজে আসার জন্য অনুপস্থিত না করতে অনুরোধ জানিয়ে ছুটির দরখাস্ত দিতে চেয়েছিলাম। এটাই আমার অপরাধ। উনি আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত পর্যন্ত করেছেন।
তার অভিযোগ, অধ্যক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর ঘনিষ্ট আত্মীয়। তিনিই (আবুল কালাম আজাদ মিন্টু) এ কলেজের সভাপতি। অধ্যক্ষ তার প্রভাবে আমাকেসহ অন্যান্য শিক্ষকদের প্রতি প্রতিনিয়ত অন্যায় আচরণ করে থাকেন। আমরা তার অন্যায় আচরণের বিচার পাই না।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার বলেন, কোনো শিক্ষক অনিয়ম করলে চাকুরিবিধি অনুযায়ী অধ্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কিন্তু শিক্ষককে মারধর করা অন্যায়। এ ঘটনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, ঘটনা সম্পর্কে আমি এখনও অবগত নই। খোঁজখবর নিয়ে দেখবো।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ রবিউল আলম সাবানের সঙ্গে তার ব্যাক্তিগত মোবাইল নম্বরে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *